কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পর্যটকের অপেক্ষায় এখনও কক্সবাজার

প্রতি বছর ঈদুল আজহায় লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে কক্সবাজারে। এবার ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রহর গুনছেন তারা।

কিন্তু এবার নানা কারণে আশানুরূপ পর্যটক হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ ঈদ সামনে রেখে সামুদ্রিক এই শহরটির ৫১৬ হোটেল-মোটেলের মাত্র ৫০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। যেখানে অন্যান্যবার শতভাগ রুমই বুকিং হয়ে যেত।

হোটেল-মোটেল জোনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে পর্যটন নগরীর আবাসন ও খাবারের দোকানগুলো। চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। মাস দেড়েক ধরে সুনসান নীরবতায় থাকা সৈকত কিছুটা কোলাহলমুখর হয়ে উঠেছে। তবে উপচে পড়া ভিড়ের কোনো লক্ষণ সেখানে দেখা যায়নি।

এবার আগাম বুকিংয়ের তোড়জোড় নেই জানিয়ে তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বিপণন নির্বাহী ইমতিয়াজ সুমেল বলেন, ‘টানা ছুটি থাকলেও ১৫ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই হোটেল-মোটেল বুকিং হয়েছে। অথচ অন্য সময়ে টানা তিন থেকে পাঁচ দিন ছুটি থাকলেই বুকিংয়ের ফোন রিসিভ করতে করতেই হাঁপিয়ে উঠতে হতো। এখন সেই ব্যস্ততা নেই।’

ভিজটা বে নামে আরেকটি হোটেলের ব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘এই ঈদের ছুটিতে তেমন চাপ নেই বললেই চলে। যা কল পাচ্ছি, তা স্বাভাবিক। এরপরও ধারণা করি, ১২ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত লাখো পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। আর যদি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি।’

এ ছাড়া পদ্মা সেতু চালুর ফলে অধিকাংশ মানুষ কুয়াকাটার দিকে চলে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন আব্দুল আওয়াল। এই আশঙ্কা এখন কক্সবাজারের সব ব্যবসায়ীরই।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে।

কাশেম সিকদার বলেন, ‘সব মিলে কয়েক লাখ পর্যটক আসবেন, এমনটি ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, ঈদের আগে আগাম বুকিং আরও বাড়বে। তবে করোনা নিয়ে ব্যবসায়ীরা একটু চিন্তিত।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পর্যটকের নিরাপত্তায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম ঘটবে, সেই বিবেচনায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সৈকতে পর্যটকদের জন্য খাবার পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার টহল জোরদারের কথা জানিয়েছে র‌্যাবও। কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মেহেদী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি ঈদে র‌্যাব তার নিজস্ব গতিতে নিরাপত্তা দেয়। তবে এবার পর্যটকদের নিরাপত্তা ইস্যুতে আমরা কঠোর থেকে কঠোর হব। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টহল জোরদার করা হবে।’

পাঠকের মতামত: